• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

কুষ্টিয়ায় ফোর লেন কাজের বাধা আইনের জটিলতা ও পুলিশ লাইন এবং জজের বাড়ী সীমানা প্রাচীর

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৯ আগস্ট ২০২৩

আকরামুজ্জামান আরিফ, কুষ্টিয়া 
কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক ও কুষ্টিয়া-ঈশ^রদী মহা সড়কের ফোর লেনের কাজ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ লাইন ও জেলা জজ এর বাস ভবনের সীমানা প্রাচীর এবং আওয়ামীলীগ নেতার মামলা কারনে। আর এতে করে সীমাহীন দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে সাধারণ পথচারীদের চলাচল এবং ছোট বড় ভারী যান বাহন চলাচলে। কাজ সময়মত শেষ করতে না পারাই সড়ক ২টি তে খানা খন্দে ভরে যাচ্ছে সেই সাথে একটু বৃষ্টি হলেই কাদায় চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়ছে রাস্তা ২টি। কুষ্টিয়া শহরকে যানযট মুক্ত রাখার পাশাপাশি পথচারীদের পায়ে হাটার জন্য মূল সড়কটি ফোর লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। রাস্তার দু’পাশে ফুটপাত করা হচ্ছে। রাস্তার ডিভাইজারের মাঝে গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্যোগও নেয়া হয়। কাজটির শেষ করতে কাজের মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু শহরের পুরাতন আলফা মোড় থেকে মজমপুর গেট পর্যন্ত এবং বিসিক শিল্পননগরীর সামনে কাজ বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বেড়ে গেছে সাধারণ মানুষের।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, প্রকল্প এলাকায় পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও জেলা জজ এর বাস ভবনের সীমানা প্রাচীর থাকায় এবং উচ্চ আদালতে মামলা হওয়ায় ফোর লেনের কাজ আটকে গেছে। ফলে উন্নত নালা ব্যবস্থা ও সুন্দর্যবর্ধনের কাজও করতে পারা যাচ্ছে না। প্রায় ৩০০ কোটি টাকার এই ফোর লেন রাস্তার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়া।
সড়ক বিভাগ জানায় , কুষ্টিয়ার মজমপুর গেট থেকে বটতৈল পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার কাজের দায়িত্ব পান জহুরুল লিমিটেড এবং মজমপুর গেট থেকে ত্রিমোহনী পর্যন্ত সড়ক নির্মানের কাজ পান ষ্পেকটা ইঞ্জিনিয়ারিং । গত জুনে কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও সময় বাড়ানো হয়েছে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। সড়ক ও জনপথ বিভাগের হিসেব মতে ৬০% এর একটু বেশী কাজ শেষ হয়েছে।
কুষ্টিয়ার মজমপুর গেট থেকে ত্রিমোহনী অংশে পড়েছে পুলিশ সুপারের কার্যালয় এবং জেলা জজের বাস ভবন। এখানে সীমানা প্রাচীর না ভাঙ্গায় কাজ বন্ধ হয়ে আছে অনেকদিন। এই সীমানা প্রাচীর না ভাঙ্গা গেলে ফোর লেন আয়তন ছোট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে রাস্তার সুন্দর্য্যও নষ্ট হবে। এছাড়া মঙ্গলবাড়ীয়া মরা গড়াই নদীর পাশে কয়েকটি বহুতল ভবন সড়কের জায়গায় নির্মান হওয়ায় এতে রাস্তার নকশা অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এ সব কারনেই নালা ও সড়কের কাজে জটিলতা বেড়েছে। সড়ক বিভাগ আরো জানায়, মজমপুর গেটে সড়ক ঘেসে রেললাইন গেছে। এখানে দোকানপাট গড়ে উঠায় কাজের বিঘœ ঘটছে। যানবাহন চলাচলসহ সাধারণ মানুষকে কষ্টে চলাচল করতে হচ্ছে। এদিকে নানা জটিলতায় নালার কাজ শেষ না হওয়ায় বৃষ্টির হলেই আশপাশের বাড়ীতে পানি প্রবেশ করছে বলেও বাড়ীর মালিকরা অভিযোগ করছে।
জানা গেছে পুলিশ লাইনের জমির মালিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় বিষয়টি সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে। পুলিশ সুপার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে পূর্ত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সভা হয়েছে । এ সময় ভুমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও ছিলেন। সভায় জেলা জজের বাড়ীর সীমানা প্রাচীরও ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বটতৈল থেকে মজমপুর গেট এলাকার কাজ বন্ধ রয়েছে উচ্চ আদালতে মামলা থাকায়। বিসিক শিল্পনগরীর সামনে ৪৫০ মিটার রাস্তার জমির মালিকানা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেন ওই জমির মালিক রেজাউল হক গং। তবে সড়ক বিভাগ বলছেন এই জমির মালিকানা তারা দাবী করলে জমি তাদের নয়। জমি সড়ক বিভাগের। সড়ক বিভাগ জানায়, জেলা পরিষদের জায়গা সড়ক বিভাগকে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে রেজাউল হক গং এরা বলছে উক্ত জায়গা তাদের খরিদকৃত সম্পত্তি। এস,এ, আর,এস খতিয়ানসহ দলিলপত্র সবই তাদের কাছে আছে বলে দাবী করছে। এই মামলার জটিলতায় সড়কের ৪৫০ মিটার রাস্তার কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে ড্রেন নির্মান কাজ প্রভাবশালীদের বাড়ী রক্ষায় পশ্চিমে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সময়ের কাগজ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নুরুন নবী বাবু বলেন, কুষ্টিয়ায় ফোর লেনের কাজ শুরু হওয়ায় আমরা আনন্দিত কিন্তু কাজ শুরু করার আগেই জমি বুঝে নিয়ে ফোর লেনের কাজ করলে আজ এই জটিলতার মধ্যে পড়তে হতো না। সাধারণ মানুষেরও ভোগান্তী হতো না।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান জানান, জমি বুঝে না পাওয়ায় ড্রেনের পাশাপাশি সড়কের কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। বিষয়গুলি নিয়ে কাজ চলছে দ্রæত সমাধান হলে এ বছরের মধ্যেই ফোর লেনের কাজ সম্পন্ন করা হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads